স্টাফ রিপোর্টার:
ময়মনসিংহের সংস্কারপন্থী পেশাদার সাংবাদিকরা বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ময়মনসিংহকে পত্র হস্তান্তর করে অবহিত করেন ময়মনসিংহ ‘‘প্রেসক্লাব ফর প্রেসম্যান’’ দাবি বাস্তবায়নে সহায়তা করার জন্য একই সাথে মৌখিক ভাবে জানিয়েছেন তারা দীর্ঘ ৫ বছর যাবত আন্দোলন করে আসছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ০২ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার বিকাল ৩ ঘটিকা হইতে দীর্ঘ সাড়ে ৭ ঘন্টা প্রেসক্লাবের সম্মুখে অবস্থানের পর জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে উভয় পক্ষের সমন্বয় সমঝোতা বৈঠকের আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা সময়িকভাবে কর্মসূচি স্থগিত করেন।
ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দীর্ঘ সাড়ে ৭ ঘন্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করাকালে যৌথবাহিনী, পুলিশ বাহিনী এবং জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত হয়ে অধিকার বঞ্চিত পেশাদার সাংবাদিকদের আন্দোলন চলাকালে সংস্কারের যৌক্তিক দাবী গুলো শুনে তারা সংহতি প্রকাশ করেন। এর আগে বহিরাগত একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বাঁধা ও হামলার মুখে অবস্থানরত ৪/৫জন সাংবাদিক লাঞ্ছিত ও আহত হয়। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রনে এলে শুরু হয় তুমুল বাকবিতন্ডা অবশেষে জেলা প্রশাসকের পক্ষে প্রতিনিধি হিসাবে সংস্কারের আশ্বাস দেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) উম্মে হাবীবা মীরা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন যৌথ বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, জেলা গোয়েন্দা শাখা ও কোতোয়ালী মডেল থানার এবং ১নং পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জগণ। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের দাবি ও সংস্কারের সমাধানের আশ্বাসে অনেকটাই বিজয়ের আনন্দে আন্দোলনরত সাংবাদিকরা প্রেসক্লাব চত্বর ত্যাগ করেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টা থেকে শুরু হওয়া সাংবাদিকদের আন্দোলনের অবস্থান কর্মসূচি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও লাইভে প্রচারিত হতে থাকলে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত নগরীর গাঙ্গিনাপাড় মোড়ে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে প্রায় ২ শতাধিক সাংবাদিকদের অভূতপূর্ব উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়।
এতে অর্ধশতাধিক স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকাসহ ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সিনিয়র সাংবাদিকরা বক্তব্য রাখেন। তাদের দাবি ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে অপেশাদার সাংবাদিকদের সদস্য পদ বাতিল করতে হবে, পেশাদার সাংবাদিকদের নিয়ে “প্রেসক্লাব ফর প্রেসম্যান” করতে হবে, গঠনতন্ত্র খসড়া তালিকা প্রনয়ণ করতে হবে, উভয় পক্ষের সাংবাদিকদের পূর্ণাঙ্গ নামের তালিকা করে নিয়ম নীতিমালা অনুসারে খসড়া ভোটার তালিকা প্রনয়ন করতে হবে, পক্ষদ্বয়ের মধ্যে আলোচনা করে সমন্বয়ের ভিত্তিতে একটি এডহক কমিটি গঠন করে সম্মিলিত ভাবে সাধারণ সভার দাবি জানিয়ে এসময় আন্দোলনকারী সাংবাদিক নেতা মূখ্য সংগঠক বিএমইউজে সাধারণ সম্পাদক শিবলী সাদিক খান সহ অর্ধশতাধিক সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। এসকল দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন শ্নোগান দিতে থাকেন আন্দোলনরত সাংবাদিকরা। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারী সাংবাদিকরা রাস্তায় বসে পড়লে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পরে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আরিফুল ইসলাম প্রিন্স, ডিবি, থানা পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর কর্মকর্তা এসে আলোচনা করে জনদূভোর্গ কমাতে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনেন। অপরদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সাইফুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক বিজয়ী ঘোষণার গুঞ্জনে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন আন্দোলনকারী সাংবাদিকরা। এক পর্যায়ে তারা প্রেসক্লাবে তালা দেয়ার ঘোষণা এবং ভূয়া ভূয়া শ্লোগান দিতে থাকলে পূণরায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে গেলে জেলা প্রশাসকের পক্ষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবীবা মীরা ঘটনাস্থলে এসে দু’পক্ষের মধ্যস্থতার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। অবরোদ্ধ প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ ও বঞ্চিত সাংবাদিকদের সংস্কার কমিটির নেতৃবৃন্দদের বৈঠকের আহবান জানালে সংস্কার কমিটির আহবায়ক মোঃ শামসুল আলম খানের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল শিবলী সাদিক খান, আলমগীর কবির উজ্জ্বল খান, সাদেকুর রহমান আলোচনার বৈঠকে বসেন। দু’পক্ষের আলোচনায় বলা হয় ত্রুটিপূর্ণ গঠনতন্ত্র সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন করতে প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্র ও আন্দোলনকারী সাংবাদিকদের পূর্ণাঙ্গ নামের তালিকা জেলা প্রশাসন বরাবরে দাখিলের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। তা পর্যালোচনা করে দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠকের মাধ্যমে চুড়ান্ত সমঝোতার আশ্বাস দেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবীবা মীরা। এ আশ্বাসে দীর্ঘ সাড়ে ৭ ঘন্টার আন্দোলন সাময়িক স্থগিত ঘোষণা করেন বঞ্চিত সাংবাদিকরা।
ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব সংস্কার কমিটির আহবায়ক মোঃ শামসুল আলম খান সাংবাদিকদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান। আলোচনা শেষে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অমিত রায় আন্দোলনকারী সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে সংস্কারের সংহতি প্রকাশ করেন। অতপর ৮ জানুয়ারি প্রেসক্লাবের অনির্বাচিত নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ করে প্রেসরিলিজের মাধ্যমে নয়া দিগন্তসহ একাধিক পত্রিকায় আন্দোলনকারীদের সম্মানহানি করতে বিভিন্ন ট্যাগ দিয়ে মিথ্যা বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত সংবাদ প্রকাশ করিলে আন্দোলনকারী নেতৃবৃন্দ এর তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ ও ঘৃনা প্রকাশ করে নষ্ট মানুষিকতার প্রায় প্রতিটি সদস্যের ফ্যাসিষ্ট অনৈতিক কর্মকান্ডের সংক্ষিপ্ত সচিত্র সংবাদ পরিবেশ করলে শতাধিক প্রিন্ট, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা প্রকাশিত হয়।
Somajer Alo24
Leave a Reply