লিয়াকত হোসেন,ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুর সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নে বিদ্যুৎ এর মিটার কারসাজির বিষয়টি ধরে ফেলায় সাংবাদিক ও তার পরিবারের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এরপর ওই সাংবাদিক বিষয়টি নিয়ে কোতয়ালী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এ ঘটনার পর থেকে ওই সাংবাদিক ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
হামলার শিকার ওই সাংবাদিকের নাম রবিউল হাসান রাজিব। তিনি জাতীয় দৈনিক মুক্ত খবর ও জাতীয় ইংরেজি দৈনিক মর্নিং গ্লোরির জেলা প্রতিনিধি।
অভিযোগ সুত্রে ও রাজিবের সাথে কথা বলে জানা যায়, তার বাড়ি কৈজুরী ইউনিয়নের কৈজুরী গ্রামে। তার বাড়ির পাশেই জামাল মল্লিক গং দীর্ঘদিন যাবত ব্যাটারী চালিত ইজি বাইক, অটো রিক্সা/ভ্যান চার্জ দেয়ার ব্যবসা করে আসছে। তারা সেখানে প্রতিদিন ৪০/৫০ টি অটো চার্জ দেয়।
অভিযোগ উঠে যে তারা মিটার কারসাজি করে বিদ্যুৎ বিল কম দিয়ে আসছে। খবর পেয়ে প্রথমে ঘটনার সত্যতা জানার চেষ্টা করে রাজিব। যখন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে বিয়ষটি বিদ্যুৎ বিভাগের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করেন তিনি। পরে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে এসেও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হন এবং অভিযুক্তদের অফিসে ডেকে নেন। খবর পেয়ে বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও ঘটনাস্থলে যান। গত ১ জুলাই অভিযুক্তরা বিদ্যুৎ অফিসে হাজির হয়ে মুচলেকা দিয়ে আসে।
এরপর অভিযুক্তরা বাড়ি ফিরে এসেই হুমকি দিতে থাকে যে আমরা বিদ্যুৎ বিল দেই বা নাই দেই তাতে তার (রাজিব) কি,ও কেন অভিযোগ দিলো,কেন সাংবাদিকদের জানালো। ওকে যেখানে পাবো সেখানেই মারবো।
এ বিষয়ে হামলার শিকার রাজিব জানান, গত ২ জুলাই বাড়ির সামনে ইউপি সদস্য রাহাতুল হাসানের সাথে কথা বলছিলাম। এ সময় অতর্কিতভাবে অভিযুক্ত জামাল মল্লিক, রাজ্জাক মল্লিক, ইমরান মল্লিক, সাহিদ মল্লিক, সাকিব মল্লিক, নাছিমা বেগমসহ আরো ৫/৬ জন লাঠিসোটানিয়ে অতর্কিতভাবে আমার উপর হামলা করে।
এসময় রাজিবের স্ত্রী তানিয়া আক্তার স্বামীকে বাচাতে এগিয়ে আসলে তাকেও মারপিট করে হামলাকারীরা। রাজীবের ৬ বছরের কন্যা রাফিয়া তাসনিম বাবাকে ধরে কান্নাকাটি করলে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। ঘটনার সময় ভিডিও করতে গেলে রাজীব ও তার স্ত্রীর মোবাইল ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা।
পরে ইউপি সদস্য মোবাইল ফোন উদ্ধার করে ফেরত দেয়। আমার চিৎকারে আশে পাশের বাড়ির লোকজন বের হয়ে এসে হামলাকারীদের হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই প্রাথমিক চিকিৎসা নেই আমি।
রাজীব জানায় বিষয়টি নিয়ে তিনি কোতয়ালী থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রাহাতুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনা আমার উপস্থিতিতেই হয়েছে। জামাল মল্লিক আমার কাছে নালিশ দিয়েছিল যে সে বিল দেক বা না দেক, রাজিবের এইটা নিয়ে মাথা ব্যাথা কেন, তুমি এইটা দেখ নইলে রাজিবকে মারবো। তখন আমি বলছি, মারামারির দরকার নেই, আমি দেখতেছি। আমি তখন রাজিবকে বাড়ির সামনে ডেকে নিয়ে এই ব্যপারে কথা বলতেছিলাম, ওই সময়েই জামাল মল্লিক, তার ছেলে ও শ্যালকরা মিলে ঘিরে ধরে ঘটনাটা ঘটায়।
এ বিষয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসানুজ্জামান জানান, আমি এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। এই ব্যাপারে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Somajer Alo24
Leave a Reply