ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গভঃ অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভারের অনিয়ম ও অপকর্মের মাধ্যমে জালিয়াতি করে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। মুখভর্তি দাড়ি ও টুপির লেবাসে দেদারসে করে যাচ্ছে নানা অপকর্ম। অভিযুক্ত মোস্তফা সরকারি হাসপাতালের এম্বুলেন্স ড্রাইভারদের ইনচার্জ হয়েও কালেভদ্রে এখন সে হয়ে উঠছে অনিয়মের মহাগুরু।
অনুসন্ধানে হাসপাতালটির সরকারি এম্বুলেন্ নং ফরিদপুর ছ -২-৭১-০০১৩ গাড়িটির ড্রাইভার কে খুঁজতে গিয়ে বেড়িয়ে আসে থলের বিড়াল। উল্লেখিত নম্বরের গাড়িটি হাসপাতালের ভিতর ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেলেও সংবাদকর্মীদের চোখে পড়ে ভিন্ন চিত্র।এই গাড়িটি সম্পুর্ন পেট্রোল চালিত গাড়ী হিসেবে বরাদ্দ দেন সরকার। কিন্তু সেই গাড়িটি গ্যাস লিলিন্ডারে রূপান্তরিত হয়ে এলপিজি সিস্টেমের করা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, মোস্তফা কে পূর্বের পরিচালক সি এন জি গ্যাসে রুপান্তর করার অনুমতি দিয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি (মোস্তফা) বলেন, রোগীর সেবা দিতে সম্পূর্ণ নিজের খরচে প্রায় বারো হাজার টাকা খরচ করে এলপি গ্যাসে রুপান্তর করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে এল পি জি গ্যাস জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করছেন মোস্তফা ড্রাইভার। বিপরীতে বিল তুলছেন পেট্রোলের মূল্যমানের।
কয়েকজন এম্বুলেন্স ড্রাইভারের সাথে কথা বলে জানা যায়, ফরিদপুর থেকে ঢাকা যেতে সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকার এল পি জি গ্যাস ব্যয় হয়।অথচ সরকারের হিসেবের খাতায় পেট্রোল বিল দেখানো হচ্ছে প্রায় ৭ হাজার ৫ শত টাকা। হাসপাতালের পার্কিং জোনে গিয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, গাড়িটি এল পি জি গ্যাসের সিস্টেম করা। এই বিষয়ে তাকে( মোস্তফাকে) জিজ্ঞেস করা হলে তিনি গণমাধ্যম কে বলেন, আগের পরিচালক সাহেব এম্বুলেন্সটি সি এন জি অবস্থায় ক্রয় করছিলেন। গাড়ীতে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার থাকলেও আমরা পেট্রোলই জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে, একজন ড্রাইভার বলেন, গত সেপ্টেম্বর মাসে তার হাতে সমস্যা থাকায় তিনি দায়িত্ব পালন না করেও ২৫০ ঘন্টা ওভার টাইমের বিল অফিসে জমা দিয়েছেন। এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মোঃ এনামুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যম কে জানান, বিষয়টি আমার জানা নাই। তবে সিএনজির বিষয় টা সম্পর্কে আমি অবগত আছি।এলপিজি গ্যাসের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। তদন্ত করে এ বিষয়ে আমি বলতে পারবো।
জানা যায়, ফরিদপুর থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ পর্যন্ত সরকারি ভাড়া প্রতি কিলোমিটার ১০ টাকা। এতে কিলোমিটার হিসেবে ভাড়ার মুল্য নির্ধারণ করা হয়। কিন্ত ফরিদপুর-ঢাকা মেডিকেলের ভাড়া ৬,৫০০ টাকা। ফরিদপুর থেকে ঢাকা যাওয়া আসার জন্য সরকারি তেল খরচ হিসেবে ড্রাইভার কে দেওয়া হয় ৬০ লিটার মূল্যের তেলের স্লিপ।যার বাজার মূল্য ৭,৫০০০ টাকা।
সূত্র জানায়, পুরো তেল বিক্রি করে মাত্র এক হাজার টাকার এলপি গ্যাস কিনে ঢাকা যাওয়া-আসা করেন তিনি। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সরকারের কোটি টাকার তেল হাতিয়ে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছেন অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার মোস্তফা। এ বিষয়ে মোস্তফার কাছে জানতে চাইলে তিনি দায়সারাভাবে বলেন,এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। সরকার প্রতিটা রোগীর প্রতি ভর্তুকি দিচ্ছে এক হাজার থেকে পনেরশত টাকা। বর্তমানে তিনি ড্রাইভার ইনচার্জ হিসাবে দায়িত্ব পালন করার দোহাই দিয়ে সরকারি নিয়মনীতিরই তোয়াক্কা করছেন না।
প্রশাসন এবং জেলা দুদক সরেজমিনে তদন্ত করে সরকারের সম্পদ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন এমনটাই দাবি এলাকাবাসী, রোগী ও রোগীর অভিভাবকদের।
Somajer Alo24
Leave a Reply