নিজস্ব প্রতিবেদক:
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ভুয়া কাগজপত্রে জমি রেজিস্ট্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে সাব- রেজিস্ট্রার পারভেজ খানের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী। এছাড়াও ভাঙ্গা থানায় সাব- রেজিস্টার, ক্রেতা ও বিক্রেতার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ভাঙ্গা উপজেলার কাউলীবেড়া ইউনিয়নের ৮৯নং প্রানপুর মৌজায় বি.এস ৩৮৮ খতিয়ানে বি.এস ৮৮৮ নং দাগে ০২ শতাংশ জমি যার শ্রেণী মিলঘর ও এ জমির বি.এস মালিক মৃত রমনী মোহনের চার পুত্র, শচিন্দ্র মোহন ০.২৫০, মনিন্দ্র মোহন ০.২৫০, শশী মোহন ০.২৫০, ননী গোপাল ০.২৫০ অংশ করে। ওই খতিয়ানে মন্তব্য কলামে অনুমতি দখল অনুযায়ী সহিদ ১০০০ অংশে দখলদার হিসেবে বি.এস চুড়ান্ত হয়।
জানা যায়, স্বাধীনতার পর হইতে বি.এস রেকর্ডীয় মালিকগণ সহিদকে অনুমতি দখল দিয়ে স্থায়ীভাবে ভারতে বসবাস করায় উক্ত সম্পত্তিতে তিনি একটি মিলঘর পরিচালনা করছেন।
তিনি জানান, হঠাৎ আমার স্বত্ত্ব দলীয় উক্ত সম্পত্তি হতে আমাকে জোর পূর্বক বেদখল
করার জন্য একই এলাকার বিবাদী মজিবর মাতুুব্বরের পুত্র মাসুদ মাতুব্বর দীর্ঘদিন যাবৎ ষড়যন্ত্র ও অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে।
সম্প্রতি মাসুদ আমাকে বেদখলের হুমকি দেয় ও বলে ঐ সম্পত্তি আমার। সাব কবলা দলিল আছে। পরবর্তীতে আমি রেজিষ্ট্রি অফিসে তল্লাশী করে প্রমান পাই এবং জানতে পারি মাসুদ মাতুব্বর
ভাঙ্গার সাব রেজিষ্টার পারভেজ খান এর সাথে আলোচনার মাধ্যমে গত ২০ এপ্রিল ২০২৫ এ ভাঙ্গা সাব রেজিষ্ট্রি অফিস থেকে সাব কবলা দলিল নং-১৯১৬ জাল দলিল তৈরী করেছে।
জমি দাতা হিসেবে মৃত লক্ষী কান্ত চন্দ্রের পুত্র সুজয় কুমার চন্দ্র রয়েছে যার কোন সম্পর্ক এই জমির সাথে নেই। তাছাড়া ওই জমির কোন মিউটেশনও হয়নি এবং বন্টন নামাও নেই। তাহলে কিভাবে সাব রেজিস্টার ওই জমি রেজিস্ট্রি করে দেন? তারা সকলে উদ্দেশ্যে প্রণোদিতো ভাবে নিজেরা লাভোবান হতে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে এ দলিল সম্পন্ন করেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে ক্রেতা মাসুদ মাতুব্বরের সাথে দেখা করে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি ওই জমির ওয়ারিশ সুজয় এর কাছ থেকে এক শতাংশ জমি কিনছি। সাব রেজিস্ট্রি অফিসে পনেরো দিন ঘুরে সাব রেজিস্টারের সাথে বুদ্ধি পরামর্শ করে তারপর জমি রেজিস্ট্রি করছি।
জমি দাতা সুজয় জানান, বি এস এ উল্লেখিত চারজন আমার চাচাতো ভাই, তাদের কোন সন্তান নাই। ওয়ারিশ হিসেবে আমি জমি পাই। ওই জমিতে আমি যাইতে পারতাম না। শহিদুল নামে একজন দখল করে রাখছিলো। বাজার কমিটির লোকজন বলছে তোর জমি তুই বিক্রি করবি তাতে কার কি? আমারও টাকার দরকার ছিলো তাই জমি বিক্রি করছি।
তিনি জানান, এক শতাংশ জমি আমি ছয় লক্ষ পঁচিশ হাজার টাকা বিক্রি করছি। আমি আড়াই লক্ষ টাকা পাইছি, আরও টাকা দিতে চাইছে। আর কত টাকা পাবেন জিজ্ঞাসা করলে সুজয় বলেন জানিনা।
ভাঙ্গা সাব রেজিস্টার পারভেজ খান বলেন, ওয়ারিশের জমি দলিল করতে মিউটেশন দরকার হয়না। সর্বশেষ যাদের নাম আছে তাদের সাথে মিল থাকলেই হয়। বি এস রেকর্ডে মন্তব্যের ঘরে দখল সুত্রে অন্য একজনের নাম থাকার পরেও কিভাবে তিনি জমি রেজিস্ট্রি করলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, মন্তব্যের ঘর আমি খেয়াল করিনি। তাছাড়া দাতা ও গ্রহীতা দীর্ঘ দিন ঘুরেছে জমিটি রেজিস্ট্রি করতে।
তিনি বলেন, তারা যে কাগজপত্র দাখিল করেছে তাতে মন্তব্যের ঘরে কোন কিছু লেখা ছিলো না। তারা আমার সাথে প্রতারণা করেছে। মন্তব্যের ঘরে লেখাটি লুকিয়ে আমাকে দিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করে নিয়েছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
Somajer Alo24
Leave a Reply