২৪ ঘন্টার মধ্যে চাঞ্চল্যকর শামীম হত্যার রহস্য উদঘাটনসহ মূল আসামি গ্রেফতার করে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গত ২০ জানুয়ারী সকালে জাতীয় জরুরী সেবা ‘৯৯৯’ এর মাধ্যমে জনৈক ব্যক্তি মুক্তাগাছা থানাধীন তারাটি ইউনিয়নের বিরাশী সাকিনস্থ মাদ্রাসার পিছনে জনৈক আঃ সাত্তারের পতিত আবাদী জমির উপর অজ্ঞাতনামা একজন কিশোরের লাশ পাওয়া গেছে বলে জানান। সংবাদ পেয়ে মুক্তাগাছা থানা পুলিশ এবং জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি চৌকষ দল দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি মুক্তাগাছা থানার তারাটি (চরপাড়া) এলাকার সিরাজ মিয়ার পুত্র শামীম মিয়া (১৬) এর লাশ হিসেবে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। ভিকটিম শামীম মিয়া পেশায় একজন অটোচালক। এ সংক্রান্তে মুক্তাগাছা থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়। মামলা নং-১৪, ধারা-৩৯২/৩০২/২০১, পেনাল কোড ১৮৬০)।
এ ঘটনায় মুক্তাগাছা থানা এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে ময়মনসিংহ জেলার পুলিশ সুপার মাসুম আহাম্মদ ভূঞা’র দিকনির্দেশনা অনুযায়ী জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ-এর নেতৃত্বে এসআই(নিঃ) শাহ্ মিনহাজ উদ্দিন ও এসআই(নিঃ) পরিমল চন্দ্র সরকার, পিপিএম তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর তদন্ত শুরু করে এবং সঙ্গীয় অফিসার-ফোর্সসহ ঘটনার ২৪ ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে মূল আসামী রাকিবুল ইসলাম (২৩)
কে তার নিজ এলাকা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। রাকিবুল তারাটি (চরপাড়া) এলাকার শফিকুল ইসলামের পুত্র।
জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) সূত্রে জানাযায়, আসামি মোঃ রাকিবুল ইসলাম পেশায় একজন ভ্যানচালক। বিগত কয়েকদিন যাবত তার কিছু অর্থের বিশেষ প্রয়োজন ছিল। গত প্রায় দুই মাস আগে সে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ২,৫০,০০০/-(দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা লোন নিয়েছে যা প্রতি সপ্তাহে ৩,০০০/-(তিন হাজার) টাকা কিস্তিতে পরিশোধ করে আসছে।
ঋণগ্রস্থ অবস্থায় আসামী কিস্তির টাকা পরিশোধে অপারগ হয়ে গত ১৮ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সকালে প্রতিবেশী অটোচালক ভিকটিম শামীমের সাথে ভাড়া নেওয়া অটো গাড়ীটি বিক্রি করবে মর্মে পরামর্শ করে। সেই মোতাবেক গত ১৯ জানুয়ারী বিকাল অনুমান ০২.০০ ঘটিকায় মুক্তাগাছা থানা এলাকার ফকিরগঞ্জ বাজার থেকে আসামী এবং ভিকটিম ভাড়ায় চালিত অটো-রিক্সা নিয়ে অনেকক্ষণ বিভিন্ন জায়গায় যত্রতত্র ঘোরাঘুরি করে একসময় জামালপুর জেলার সদর থানাধীন নরুন্দি বাজারে যায়। সেখানে বিকালে তারা অজ্ঞাত একজন ব্যক্তির কাছে গাড়িটি ১০,০০০/-(দশ হাজার) টাকায় বিক্রি করে।
ভিকটিম শামীম এই টাকা হস্তগত করে আসামী রাকিবুলকে মাত্র ২,০০০/-(দুই হাজার) টাকা দিলে আসামী ক্রোধের বশবর্তী হয়ে ভিকটিমকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরবর্তীতে সে ভিকটিম শামীমকে কৌশলে ডেকে নিয়ে ঘটনাস্থল মুক্তাগাছা থানার বিরাশি গ্রামের একটি নির্জন জায়গায় যায়। এরপর সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ৭ টার দিকে ভিকটিম শামীমের পরিহিত জ্যাকেটের ফিতা টান দিয়ে খুলে তার গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং তারাটি ইউনিয়নে মাদ্রাসার পিছনে ফেলে রেখে চলে যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামী রাকিবুল ইসলামকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কর্তৃক গণমাধ্যমে পাঠানো প্রেস রিলিজে জানানো হয়েছে।
Somajer Alo24
Leave a Reply