শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ০২:৫০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ভবিষ্যতের বাংলাদেশ হবে তারুণ্য নির্ভর; সীতাকুণ্ডে ছাত্রদলের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় লায়ন আসলাম চৌধুরী সাংবাদিক সোহাগ আরেফিন এর মান ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা; সিআরএ’র নিন্দা ও প্রতিবাদ কুড়িগ্রাম জেলার উন্নয়নে মানুষ আর মিথ্যে প্রতিশ্রুতি চায় না: সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি ইজারা বাতিল ও রাখাইনে করিডোর দানের ষড়যন্ত্র রুখতে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা; স্কপ চট্টগ্রামে বেওয়ারিশ বৃদ্ধাশ্রমে রান্না করা খাবার বিতরণ কাল চট্টগ্রামে পথশিশু ও ছিন্নমূল মানুষের সাথে ঈদের খুশি ভাগাভাগি করে নিতে ডিজিটাল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে খাবার বিতরণ অনুষ্ঠিত কুড়িগ্রামে ৭৮টি কোরবানির গরু নিয়ে দুঃস্থদের পাশে যাকাত ফাউন্ডেশন অব আমেরিকা চট্টগ্রামে বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০২৫ উপলক্ষে ডিজিটাল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালিত পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপি নেতা আব্দুর রাজ্জাক চট্টগ্রামে সিডিএ’র প্লানিং ছাড়াই ব্যবসায়ীর জায়গা দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ; প্রশাসন ও সিডিএ’র নিরবতা

বঙ্গবন্ধুর হাতেই আমার রাজনীতির হাতেখড়ি: সংসদে রাষ্ট্রপতি

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৩
  • ৩৭৩ Time View

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতেই আমার রাজনীতির হাতে খড়ি ও প্রথম উত্থান এবং দ্বিতীয় উত্থান ঘটে শেখ হাসিনার উদ্যোগেই। তিনি শুক্রবার (৭ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ‘বিশেষ অধিবেশনে’ ভাষণ দানকালে একথা বলেন। এটাই রাষ্ট্রপতির হিসেবে সংসদে দেয়া আবদুল হামিদের শেষ ভাষণ।

রাষ্ট্রপতি সংসদকে জানান, ‘বঙ্গবন্ধুর হাতে হয়েছিল আমার রাজনীতির হাতেখড়ি ও প্রথম উত্থান আর ১৯৯৬তে দ্বিতীয় উত্থান ঘটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতেই এবং তার উদ্যোগেই।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর অপার স্নেহ আর তার দূরদর্শিতার কারণেই আমি আজকে এই অবস্থানে পৌঁছেছি। রাষ্ট্রপতি হিসেবে নয় বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতে আমি বেশি গর্ববোধ করি।’

সংসদে দেয়া তাঁর বিদায়ী ভাষণে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সেদিন আমাকে ডেপুটি স্পীকারের পদমর্যাদা না দিলে হয়তো বা কিশোরগঞ্জ ঘিরে আমার রাজনীতি আবর্তিত হতো।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আমার পরিচয়। আমি তখন কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল কলেজের ছাত্র। পরিচয় থেকেই বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শের অনুসারী হয়ে যাই।

আবদুল হামিদ বলেন, মাঝে মাঝে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা হতো অনেক সময় তিনি নিজেও ডেকে পাঠাতেন। সে সময় বঙ্গবন্ধু ছিলেন আমার একমাত্র ধ্যান-ধারণা তাঁর নীতি, আদর্শ ও নির্দেশনাই আমার কাছে সবচেয়ে বেশি অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় বিষয় ছিল।

রাষ্ট্রপতি স্মৃতিচারণ করেন, ‘শুধু আমি কেন ওই সময় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অনেক যুবকের কাছে বঙ্গবন্ধু ছিলেন একমাত্র আদর্শ; যার পিঠে একবার বঙ্গবন্ধুর হাত পড়েছে বা স্নেহের ছোঁয়া লেগেছে তার পক্ষে বঙ্গবন্ধুকে ভুলে যাওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়।’

রাষ্ট্রপতি হিসেবে তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হবে আগামী ২৪ এপ্রিল। রাষ্ট্রপতি হামিদ আটবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি ডেপুটি স্পীকার এবং স্পীকারের দায়িত্ব ও পালন করেছেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমৃত্যু আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি গণতন্ত্রের উন্নয়নকেও সমান গুরুত্ব দিতেন। তাই ৭ই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক স্বাধীনতার সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক মুক্তির কথা বলেছেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধের পর জাতীয় সংসদকে কার্যকর করার ক্ষেত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর দুরদর্শী নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি ।

আবদুল হামিদ বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরেই পুনর্গঠন কর্মকান্ডের সঙ্গে সঙ্গে সংসদকে কার্যকর করার উদ্যোগ নেন।

তিনি বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশে গণপরিষদের প্রথম অধিবেশন ১৯৭২ সালের ১০ এপ্রিল ঢাকার তেজগাঁওস্থ সংসদ ভবনে শুরু হয়। গণপরিষদে ১৯৭২ সালের ০৪ নভেম্বর আমাদের সংবিধান গৃহীত হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ থেকে তা কার্যকর হয়।
আবদুল হামিদ বলেন, স্বাধীনতার এত অল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান প্রণয়ন নিঃসন্দেহে গণতন্ত্রকামী যেকোনো দেশের জন্য গর্বের। এই সংবিধানে প্রথম স্বাক্ষরকারী আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘আমি স্বাক্ষর করি ৭১ নম্বরে। এ সংবিধানের আওতায় প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ। এর ঠিক এক মাস পর একই বছরের ৭ এপ্রিল প্রথম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে। আজ মহান জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে।’

তিনি ৫০ বছর আগে জাতীয় সংসদের প্রথম সংসদের প্রথম অধিবেশনে সংসদ নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নবনির্বাচিত স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকারকে অভিনন্দন জানিয়ে দেয়া বক্তব্যের স্মৃতিচারণ করেন।
রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, ‘সেদিন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন-আপনার কর্তব্যপালনে সংসদের সদস্যবৃন্দ সবসময় আপনার সঙ্গে সহযোগিতা করবেন।’

‘আমি আশা করব, যে ট্র্যাডিশন পার্লামেন্টারি সিস্টেমে আছে, আপনি সেটার প্রতি লক্ষ্য রেখে নিরপেক্ষভাবে আপনার কার্য পরিচালনা করবেন। আমাদের কাছ থেকে আপনি সাহায্য ও সহযোগিতা পাবেন। এই সংসদের মর্যাদা যাতে রক্ষা পায়, সেদিকে আপনি খেয়াল রাখবেন, কারণ আমরা যে ইতিহাস সৃষ্টি করেছি, সে ইতিহাসে যেন খুঁত না থাকে।’

বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘দুনিয়ার পার্লামেন্টারি কনভেনশনে যে সব নীতিমালা আছে, সেগুলো আমরা মেনে চলতে চাই। সঙ্গে সঙ্গে যেন এমন একটি সংসদীয় পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারি, যাতে দুনিয়া আমাদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। এখানে কোন দল বা মতের নয়- এখানে এই দেখব যে, প্রত্যেক সদস্য যেন যাঁর যে অধিকার আছে, সে অধিকার ব্যবহার করতে পারেন। সেদিকে আপনিও খেয়াল রাখবেন বলে আমি আশা পোষণ করি।’

তিনি বলেন, ‘এ সম্পর্কে আপনি আমাদের পূর্ণ সহযোগিতা পাবেন। পার্লামেন্টারি ট্রেডিশন পুরোপুরি ফলো করতে আমরা চেষ্টা করব।’

রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, গণপরিষদে কোনো বিরোধী দল না থাকলেও সংসদ অধিবেশন হতো প্রাণবন্ত। যুক্তিতর্ক ও মতামত উপস্থাপন ছিল খুবই আকর্ষণীয়।

তিনি বলেন, ন্যাপ থেকে নির্বাচিত একমাত্র গণপরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত পার্লামেন্টে বক্তৃতা করার সুযোগ চাইলে সবসময়ই সুযোগ পেতেন। স্পিকার মাঝে মধ্যে তাঁকে মাইক দিতে না চাইলেও বঙ্গবন্ধু বলতেন ‘ওকে সুযোগ দেন, বিরোধী পক্ষের কথা আগে শুনতে হবে।’

সংবিধান প্রণয়নের লক্ষ্যে কমিটি গঠন প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘শুধু যে আমাদের দলীয় সদস্য থেকে কমিটি করব তা নয়, দল-মত নির্বিশেষে সকলের সঙ্গে আলোচনা করা হবে, জনগণকে যাতে তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী একটা সুষ্ঠু সংবিধান দেওয়া যায়, এই উদ্দেশ্যে সকলের মতামত চাইব, এই সংবিধানে মানবিক অধিকার থাকবে, যে অধিকার মানুষ চিরজীবন ভোগ করতে পারবে।’

বঙ্গবন্ধু সংসদ কার্যক্রমের পাশাপাশি দলীয় শৃঙ্খলাকে অগ্রাধিকার দিতেন উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রথম অধিবেশনের প্রথম কার্যদিবসেই বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- ‘আমি মাননীয় সংসদ সদস্যদের আর একটা কথা মনে করিয়ে দিতে চাই যে, কোনো প্রস্তাব আনার আগে পার্টিতে তা আলোচনা করে তারপর উপস্থাপন করবেন। তা না হলে এর দ্বারা পার্টির শৃঙ্খলা নষ্ট হবে।’
আবদুল হামিদ বলেন, সংসদ সদস্যদের অভাব-অভিযোগ, সুখ-দুঃখ সবকিছুর খবর রাখতেন বঙ্গবন্ধু এবং প্রয়োজনে তাদের জন্য সম্ভাব্য সবকিছুই করতেন।

রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুর শিষ্টাচার ও পরমত সহিষ্ণুতার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, পার্লামেন্টে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে স্পীকার অনেক সময় বিব্রত হতেন, কিন্তু বঙ্গবন্ধু হতেন না।

রাষ্ট্রপতি বলেন, রাজনৈতিক মতাদর্শের যত অমিলই থাকুক না কেন বঙ্গবন্ধু বিরোধী দলের নেতাদের যথাযথ সম্মান দিয়ে কথা বলতেন। তিনি বলেন, আসলে রাজনীতিতে শিষ্টাচার ও পরমত সহিষ্ণুতার কোনো বিকল্প নেই।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

Advertise

Ads

Address

প্রধান কার্যালয় :৩৭৯/৩ কলেজ রোড (আমতলা) আশকোনা ঢাকা - ১২৩০ Email:somajeralonews24@gmail.com Contact  :01823634261 Office:01924751182(WhatsApp) Video editor :01749481920
© All rights reserved 2023

Somajer Alo24