রোববার (২০ অক্টোবর) সকালে বিদ্যালয় সংলগ্ন সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে এলাকাবাসী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সাংবাদিকদের জানান, প্রধান শিক্ষক মমতাজ বেগম বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই একের পর এক অনিয়ম করে যাচ্ছেন।
বিদ্যালয় থেকে তাঁর (মমতাজ বেগম) বাড়ির দূরত্ব খুব নিকটে হওয়ায় বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে কোনো ধরনের নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা করতেন না। এছাড়াও সময়মত বিদ্যালয়ে আসেন না, যদিও কখনো আসেন আবার খুব দ্রুত বিদ্যালয় ছেড়ে চলে যান। এর ফলে তার সহকারী শিক্ষকরাও একই পথে হাঁটছেন।
আরো পড়ুন- চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু বাংলা বিদ্যাপীঠে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু
সরকারি এ বিদ্যালয়ে আর্সেনিক মুক্ত পানির ব্যবস্থা থাকার পরেও প্রধান শিক্ষকের অব্যবস্থাপনার কারণে শিক্ষার্থীরা বিশুদ্ধ পানি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের টয়লেট না থাকায় আশপাশের বাড়িতে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মানববন্ধনে অংশ নেওয়া একাধিক অবিভাবক।
এ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে শ্রেণী কার্যক্রম চলাকালীন সময় শ্রেণিকক্ষে প্রাইভেট পড়ানো, বিদ্যালয়ের ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়ার সরঞ্জাম ও সাংস্কৃতিক সরঞ্জাম বিদ্যালয়ে ব্যবহার না করে নিজের বাসায় নিয়ে ব্যবহার, স্লিপে বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে শুরু করে সরকারি সব ধরনের বরাদ্দ নামমাত্র খরচ দেখিয়ে তিনি ইচ্ছেমতো ভোগ করে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষককে বারবার অবগত করার পরও প্রধান শিক্ষক এতে কর্ণপাত করতেন না।পরবর্তী সময়ে বিষয়টি সাবেক সভাপতি লুৎফুর রহমানকে জানানো হলে তিনিও ওই সময়ে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিকবার অভিযোগ দেওয়া হলেও ওপর মহলে তার লোক থাকার কারণে সেগুলোর কার্যকারিতা হারায়।
প্রধান শিক্ষক মমতাজ বেগমের পিতা ও তার স্বামী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে অভিভাবদের বিভিন্ন সময়ে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দেন।
আরো পড়ুন – চট্টগ্রামে এস. এন. প্রাইভেট হোমের ৪র্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত
তাঁর এহেন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ফলে দিন দিন বিদ্যালয়ে হারাচ্ছে তার শিক্ষার পরিবেশ। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত বেত্রাঘাত ও মারধরের কারণে অনেক কোমলমতি শিক্ষার্থী এ বিদ্যালয় ছেড়ে চলে যাচ্ছে।
ফলশ্রুতিতে বিদ্যালয়টি দিন দিন শিক্ষার্থীশূন্য হয়ে পড়লেও ছাত্রছাত্রী সংগ্রহে শিক্ষকদের কোনো তৎপরতা নেই।
চলতি বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগের বছরগুলোতে তিনি তার অনুগত বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি সাজিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা করতেন। এভাবেই দীর্ঘ দেড়যুগ তিনি বিদ্যালয়টি কুক্ষিগত করে রাখেন। পরবর্তী সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের সকল বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমতাজ বেগম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র এ বিদ্যালয়ের সুনাম বিনষ্ট করতে অহেতুক মিথ্যা অভিযোগ করে আসছে। যার কোনোটিরই ভিত্তি নেই। তিনি আরো বলেন, বিদ্যালয়ের আশেপাশের স্থানীয় বাড়ির লোকজন ফসলি মৌসুমে স্কুলের মাঠে ফসল রাখেন, ফসলের যাবতীয় প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজ সম্পন্ন করেন, এছাঢ়াও বিদ্যালয়ের মাঠে ও বেড়ার সঙ্গে গরু-ছাগল তারা। এতে বিদ্যালয়ের পরিবেশদূষণ, শব্দদূষণ ও শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় মনোযোগ বিঘ্নিত হয়।
Somajer Alo24
Leave a Reply