নিজস্ব প্রতিবেদক:
ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার এনায়েতপুরের কাহালগাঁও গ্রামের বন বিভাগের জমির উপর দিয়ে চলাচলের রাস্তা কেটে তছনছ করে ফসলী জমিতে রূপান্তরিত করার অভিযোগ উঠেছে একই এলাকার মৃতঃওয়াজেদ আলীর কনিষ্ঠ পুত্র আলিম উদ্দীন। এতে নূরুল ইসলাম এর পরিবার সহ প্রায় ৩০ টি পরিবারের চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনার পর থেকে নুরুল ইসলামের পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন।
স্থানীয়সূত্রে জানাযায়, আওয়ামী লীগ নেতা মেহেদী হাসান খলিলের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ গত ১২/৭/২০২৪ তারিখ রাত প্রায় দেড়টার দিকে রাস্তা কাটার কোদাল খুন্তি শাবল ইত্যাদি নিয়ে রাস্তাটি দুইভাগ করে এবং বিভিন্ন স্হানে রাস্তাটি এবরো- থেবরো ক্ষতবিক্ষত করে। এর নেতৃত্ব দেন মেহেদী হাসান খলিলের ভাগিনা এলাকার ছাত্রলীগ নেতা দাবী করা নাসির। নাসিরের নেতৃত্বে ৩০-৪৫ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী রাতের আধারে রাস্তাটি কেটে ফেলে। বলাবাহুল্য এই রাস্তটি বহু পুরনো এবং প্রতিদিন প্রায় শতশত লোক এই রাস্তাটি ব্যবহার করে চলাচল করতেন।
গত ১২ জুলাই রাতে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা রাস্তা কেটে ফেলার সময় জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল করেও কোন প্রতিকার পাননি বরং হয়রানির শিকার হয়েছেন ভুক্তভোগী নুরুল ইসলামের পরিবার।
নির্ভরযোগ্যসূত্র ও সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানাযায়, এনায়েতপুর বনবিটের কাহালগাঁও মৌজার ১৮৩ দাগের ভূমিতে গজারী বন ছিল। এখনো বেশ কিছু গাছ রয়েছে। গত ২০২২ ইং সালে শতাধিক গজারী গাছ কেটে ফেলেন আলিম উদ্দিন। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া সাংবাদিককে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমন করা হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এক সাংবাদিক। উক্ত ঘটনায় তৎকালীন বিট কর্মকর্তা মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ২ টি মামলা দেন। আশ্চর্যের বিষয় হলো ২ মামলার কোনটাতেই আলিম উদ্দিনকে আসামী করা হয়নি। উল্টো পুলিশ প্রশাসন দিয়ে মিথ্যা মামলা ও খলিল বাহিনী হুমকি প্রদান করেন মিথ্যা মামলায় আসামী হওয়াদের পরিবারগুলোকে।
বনবিভাগের জমির উপর দিয়ে চলাচলের রাস্তাটি কেটে ফেলার বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে বিভাগীয় বন কর্মকর্তাসহ উথুরা রেঞ্জ কর্মকর্তা বরাবর এবং সরকারের বিভিন্ন দপ্তরসহ জনপ্রতিনিধিদের বরাবর প্রতিকারের পেতে অভিযোগ করা হলেও রাস্তার বিষয়ে কার্যত কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বুলবুল হোসেনও নিরব ভূমিকা পালন করেন। স্থানীয়রা জানান, খলিল চেয়ারম্যান গ্রুপের রাজনীতি করেন এবং চেয়ারম্যানের কথা ছাড়া খলিল কিছুই করেন না। চেয়ারম্যান এর নিরবতা তার প্রমাণ হতে পারে বলে জানান স্থানীয়রা। তবে গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগ করার পর থেকে আত্নগোপনে রয়েছে মেহেদী হাসান খলিল।
অভিযুক্ত আলিম উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি মিডিয়া কর্মীদের সাথে কথা দিতে রাজি হননি।
এবিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা মেহেদী হাসান খলিলের সাথে তার ব্যবহৃত নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে,
সরেজমিনে গিয়ে ব্যবস্হা গ্রহনের কথা জানান এনায়েতপুর ইউপি চেয়ারম্যান বুলবুল হোসেন।
এবিষয়ে উথুরা রেঞ্জ কর্মকর্তা আ.স.ম রিদোয়ানুল ইসলাম বলেন, সংবাদ পেয়ে আমরা একাধিকবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আলিমকে বার বার বুঝানো হয়েছে রাস্তাটি পুর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে। কিন্তু আলীম উদ্দিন রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন। তার প্রেক্ষিতে বনবিভাগের জমির শ্রেনী পরিবর্তন করায় তার বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। দেশের অবস্থা স্বাভাবিক হওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Shohidul Islam
SOMAJER ALO24