নিজস্ব সংবাদদাতা:
ময়মনসিংহের উথুরা রেঞ্জের আওতাধীন এনায়েতপুর বিট অফিসের বনমালি রহিমের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। তার বেপরোয়া ঘুষ বানিজ্যে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। এনায়েতপুর অঞ্চলের বন বিভাগের সংরক্ষিত জায়গায় গত দুই বছরে গড়ে উঠছে একের পর এক পাকা স্থাপনা। স্থানীয়দের ভাষ্য- প্রতিটি স্থাপনা গড়ে তুলতে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বনমালি রহিম। তার চাহিদা মত ঘুষ দিলেই নির্মাণ করা যায় স্থায়ী স্থাপনা। এমনকি ব্যক্তি মালিকানা বাঁশ ও গাছ কাটলেও রহিমকে ঘুষ দিতে হয়। প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
রহিম এতটাই বেপরোয়া যে, উর্ধ্বতন কর্মকতাদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বেপরোয়া ঘুষ বানিজ্য চালিয়ে আসছেন। তার বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ উঠলে বিভাগীয় বন বিভাগ তাকে রসুলপুর রেঞ্জ মুক্তাগাছায় বদলী করেন। কিন্তু সেটা শুধু কাগজে কলমে। বাস্তবে রহিম এনায়েতপুর বিটেই রয়ে গেছেন। স্থানীয়রা বলেন, রহিমের অনেক ক্ষমতা। বনবিভাগের সর্বোচ্চ পর্যায়ে কিছু অসাধু কর্মকর্তার সাথে সুসম্পর্ক থাকায় বিট কর্মকর্তাও তার কাছে অসহায়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এনায়েতপুর বিট এলাকার পাহাড়ি জায়গায় পাকা ঘরবাড়ি নির্মাণের জন্য বনমালি রহিমের পক্ষে আর্থিক লেনদেন করেন কতিপয় কিছু দালাল শ্রেনীর মানুষ। বিটের প্রতিটি এলাকা বা পাড়া ভিত্তিক দালাল শেনীর মাধ্যমে ঘুষ লেনদেন করেন রহিম।
স্থানীয়দের দাবি রহিম ও তার দালাল শ্রেনীর কাছে জিম্মি এনায়েতপুর এলাকায় বসবাসরত সাধারণ মানুষ।
মোটা অংকের ঘুষের মাধ্যমে অনেকে স্থায়ী পাকা ঘরিবাড়ি নির্মাণ করেছেন। এসব পাকা ঘরবাড়ি নির্মাণ করতে এদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়েছেন রহিম।
আর তাই বনমালি রহিম এনায়েতপুর বিট এলাকায় রাজত্ব কায়েম করলেও বন মামলার ভয়ে কেউ টুঁ শব্দ করার সাহস পায় না। এলাকার সাধারণ মানুষ তার কাছে এক প্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছে। বনমালি রহিম পাহাড়ি জনপদে যেন এক অঘোষিত রাজা এমনটা জানিয়েছেন পাহাড়ে বসবাসরত সাধারণ জনগণ। তার এসব ঘুষ বানিজ্য ও অপকর্মের বিষয়ে রেঞ্জ ও বিট কর্মকর্তাদের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেও প্রতিকার পাননি কেউ। বরং অভিযোগ করার পর থেকে মিথ্যা মামলা আতংকে রয়েছেন অভিযোগকারীরা।
অভিযোগ অস্বীকার করে বনমালি রহিম জানান, আমি এসবে জড়িত নই। কারও কাছ থেকে কোনো সময় টাকা নেওয়া হয়নি। এবিষয়ে আমি আর কথা বলতে চাইনা।
এ বিষয়ে এনায়েতপুর বিট কর্মকর্তা শিমলি বিনতে হুদা বলেন, আমি কিছুদিন হলো যোগদান করেছি। বর্তমানে ট্রেনিং আছি। এই বিষয়ে আমার তেমন কিছু জানা নেই। তবে আমি খোঁজ নিয়ে দেখে আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলব।
এবিষয়ে উথুরা রেঞ্জ কর্মকর্তা আ.স.ম রেদোয়ানুল হক এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বনমালি রহিমের বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ উঠেছে সেগুলো খতিয়ে দেখব। আর রহিম আপাতত ছুটিতে আছে। ছুটি শেষে তিনি রসুলপুর রেঞ্জে যোগদান করবেন। তবে আমার জানামতে আপাতত কোন ঘরবাড়ি নির্মাণ হচ্ছে না। ইতোমধ্যে যেগুলো হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নেওয়া হচ্ছে এমনকি উচ্ছেদের নির্দেশনা রয়েছে।
Shohidul Islam
SOMAJER ALO24