ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা মিজানুর রহমানের পিছনে জামায়াতে নামাজ আদায়ে অনাস্থা প্রকাশ করেছেন মসজিদে নিয়মিত নামাজ আদায় করা ৩১ জন মুসুল্লি।
স্থানীয় ৩১ জন মুসল্লি এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে গতকাল (৪ মার্চ) সোমবার একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শব-ই বরাত রাতে এশার নামাজের পূর্বে পবিত্র শব-ই বরাত এর ফজিলত সম্পর্কে কোনো আলোচনা না করে পূর্ব নির্ধারিত সময়ে এশার নামাজ শুরু করেন। এতে মুসুল্লিদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারেনি।
প্রতি বছর পবিত্র শব-ই বরাত ও শব-ই কদরের রাতে এ রাতের ফজিলত সম্পর্কে ২০ থেকে ২৫ মিনিট আলোচনা করে তারপর নামাজ শুরু করেন। পবিত্র এ রাতের ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা না করায় আক্ষেপ প্রকাশ করেন স্থানীয় মুসুল্লিগণ।
এ ইমামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে মুসুল্লিদের সাথে দুর্ব্যবহার, ফরজ নামাজ পড়ানোর সময় ভুল করা, ওয়াক্তের নামাজ দেরিতে আদায়সহ নানান অভিযোগ অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন মুসল্লিগণ।
এছাড়াও ফজরের ওয়াক্তে নিয়মিত মসজিদে না আসা ও পবিত্র মাহে রমজানে হাফেজ নিয়োগে স্বজনপ্রীতি করে নিজেদের লোক নিয়োগ প্রদান এবং গত ঈদের নামাজ পড়ানোর সময় ভুল করেন বলেও অভিযোগসূত্রে জানা যায়।ইমাম মিজানুর রহমান বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি ও বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা মিজানুর রহমান বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ সত্য নয়। কিন্তু কিছু অভিযোগ সত্য।আমি একটি মাদ্রাসা পরিচালনা করি। তদন্ত প্রতিবেদনে আমি দোসী সাব্যস্ত হলে আমাকে যে শাস্তি দিবে আমি তা মেনে নিবো।
এ অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুল কাদের, উপজেলা এলজিআরডি ব্যবস্থাপক মো: শাহ আলম ও উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মেহেদী হাসানের সমন্বয়ে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ইমামের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশের বিষয়ে ঢাকাস্থ বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মুফতি রফিকুল ইসলাম জানান, কোনো ইমামের প্রতি যদি মুসল্লিগণ অনাস্থা প্রকাশ করেন তাহলে সেই ইমামের পিছনে নামাজ আদায় করলে নামাজ সহীহ ও বিশুদ্ধ হয় না।কোন ইমামের প্রতি অসন্তুষ্টি বা অনাস্থা সৃষ্টি হলে, তার জন্যে ইমামতি করা মাকরূহে তাহরীমী।
যে ইমামের প্রতি মুসল্লিরা অসন্তুষ্ট থাকে, সে ইমামের পরিণতি সম্পর্কে প্রসিদ্ধ হাদিস গ্রন্থ তিরমিজি শরিফে একটি অধ্যায় আনা হয়েছে। সেখানে বেশ কয়েকটি হাদিস আনা হয়েছে। হাসান (রহ.) বলেন, আমি আনাস (রা.)-কে বলতে শুনেছি, রাসুলল্লাহ (সা.) তিন ব্যক্তিকে অভিশাপ দিয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন হলো, যে ব্যক্তি মুসল্লিদের অপছন্দ সত্ত্বেও তাদের ইমামতি করে।
Shohidul Islam
SOMAJER ALO24