প্রিন্ট এর তারিখঃ জুন ২৭, ২০২৫, ১১:২৪ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ মার্চ ৭, ২০২৪, ৪:২৬ পি.এম
লিয়াকত হোসেন,ফরিদপুরঃ
ফরিদপুরে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ দিবস উপলক্ষে ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ভিনদেশীদের মাধ্যমে ৭ই মার্চের ভাষণ ও ভাষণের গুরুত্ব উপস্থাপন শীর্ষক আলোচনা সভা এবং বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের সেই ১৮ মিনিটের ১হাজার ১০৮ শব্দের ভাষণে ১১০৮ জন মুজিব নিয়ে শব্দ মিছিল অনুষ্ঠিত। এসময় বিদেশিরা বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ তাদের নিজ নিজ ভাষায় উপস্থাপন করে সবাইকে মুগ্ধ করেছেন।

আজ (৭ মার্চ) বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩ ঘটিকায় ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদারের সভাপতিত্বে ফরিদপুরের কোর্টপাড় সংলগ্ন শেখ জামাল স্টেডিয়ামে আলোচনা সভা ও ভাষণ উৎসবে তারা বঙ্গবন্ধুর ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেন।
বিদেশি নাগরিকরা হলেন: আমেরিকার নাগরিক জ্যাকব বার্লিন ও জয়া বার্লিন, ভারতের রবীন্দ্র মুরালিধর শর্মা, জাপানের নাকানো কজি, শ্রীলংকার রেজি পিটার সেবাসটেইন, ফিলিস্তিনের কারাম রাইদ আইয়াড ও নেপালের সুমিত কোহার।

এর আগে শেখ জামাল স্টেডিয়াম থেকে শুরু করে ফরিদপুর শহর প্রদক্ষিণ করে ১ হাজার ১০৮ জন স্কুল শিক্ষার্থী ‘ক্ষুদে বঙ্গবন্ধু’র একটি দল।১৮ মিনিটের বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণের ১১০৮টি শব্দকে ধারণ করে একেকটি শব্দের একেকটি প্ল্যাকার্ড নিয়ে তারা স্মরণ করে ইতিহাসের সেই মহানায়ককে।
এরপর শুরু হয় ১১০৮ শব্দখচিত বেলুন উড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর অমর বাণীকে বাংলার আকাশে ছড়িয়ে দেয়ার অভূতপূর্ব সেই পর্ব। বেলুন উড়িয়ে ভাষণ উৎসবের উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান এমপি।

তে বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর আসনের এমপি এ কে আজাদ, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ঝর্না হাসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর মোহাম্মদ ক্যাপ্টেন বাবুল, ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আরিফ, ফরিদপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা ও ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র অমিতাভ বোস।
প্রধান অতিথি আব্দুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ নিয়ে
বহু অনুষ্ঠানে তিনি গেছেন, তবে এত উন্নত মানসম্পন্ন ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন তিনি কখনও দেখেননি।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্টদের এমন আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে যা বলেছেন তা বিদেশি অতিথিদের বক্তব্যে ভিন্ন মাত্রায় উঠে এসেছে। নতুনভাবে মূল্যায়িত হয়েছে ঐতিহাসিক ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এই কথামালা। নতুন প্রজন্মের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ উৎসবের সব পর্বের বিষয়গুলো শুধু মুখে নয়, হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করার জন্য তিনি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, শিক্ষক অভিভাবকদের দায়িত্ব বঙ্গবন্ধু ও তার আদর্শকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে নানা আয়োজন ও উদ্যোগের মধ্যদিয়ে এভাবেই প্রথিত করা; যাতে তারা ভুলে না যায় বাংলার প্রকৃত ইতিহাস।
ফরিদপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য এ কে আজাদ তার বক্তব্যে বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০২৬ সালে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নত করে তুলবেন, তারই ধারাবাহিকতায় ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলব। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক এই ভাষণ এই সমৃদ্ধ বাংলাদেশ সোনার বাংলার স্বপ্ন আমাদেরকে দেখিয়েছে; সেই স্বপ্ন পূরণে আমরা নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব, আসুন এই প্রত্যয় ঘোষণা করি।’
সংসদ সদস্য ঝর্ণা হাসান তার বক্তব্যে বলেন, ইতিহাস যাতে জানতে না পারে বাঙালিদের বীরত্বপূর্ণ ইতিহাস, সেজন্য খুনি জিয়া বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে নিষিদ্ধ করে রেখেছিল। কারণ এই ভাষণের মধ্যে জাতির ভবিষ্যৎ রূপরেখা বিদ্যমান। তাই এই ঐতিহাসিক ভাষণকে বেশি বেশি চর্চা করতে হবে।
জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার সভাপতির বক্তব্যে বলেন, ‘১১০৮ টি শব্দের নিখুঁত গাঁথুনিতে অমর এ ভাষণের এক একটি শব্দ, এক একটি পুস্তক। বিশ্বের মুক্তিকামী ও নিপীড়িত সব জাতিগোষ্ঠীর মুক্তির চিরন্তন অনুপ্রেরণা। রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রে স্বাধীনতার প্রাণপুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুখনিঃসৃত এই শব্দমালা বাঙালি জাতিকে এনে দিয়েছে মুক্তির স্বাদ, নিজস্ব ভূখণ্ড, সমৃদ্ধির সোপান ও একটি স্বাধীন বাংলাদেশ।’
পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইয়াসিন কবির ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ।