শেরপুরের সীমান্তবর্তী তিন উপজেলার গারো পাহাড় ঘেরা বনে বাণিজ্যিকভাবে মধু চাষে বেশ সাফল্য এনেছে।সীমান্তের প্রায় ৪০ কিলোমিটার জুড়ে ওই পাহাড়ি এলাকায় বছর ব্যাপী দেশের বিভিন্ন জেলা ও স্থানীয় শিক্ষিত বেকার সহ প্রায় দুই শতাধিক মৌ চাষি মধু চাষ ও আহরণ করছেন।
আহরণকৃত এসব মধু এলাকার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীর ছাড়িয়ে এখন রপ্তানিও হচ্ছে।এতে একদিকে সাফল্য পেয়ে উজ্জীবিত ওইসব চাষিরা,অন্যদিকে লাভের আশায় আগ্রহী হয়ে উঠছেন এলাকার অনেকে। শেরপুরের পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিণ ভয়েসের সভাপতি রফিক মজিদ বলেন, বাণিজ্যিকভাবে ওই মধু চাষে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ ব্যবসায় হাজারো তরুণের কর্মসংস্থান হবে। এছাড়া পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাসরত কর্মহীনদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
সরেজমিনে জানাযায়,কয়েক বছর আগে শেরপুরের ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী,নালিতাবাড়ী এই ৩ উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় প্রকৃতিক ভাবে নানা গাছগাছালি ছাড়াও স্থানীয় বন বিভাগ নানা ধরনের ফলদ,বনজ ও ঔষধি গাছ রোপণ করেছে বলে সম্ভাবনা বেশি হয়েছে মধু চাষে। ফলে এখন সারা বছর পাহাড়ে অনেক বৃক্ষ ছেয়ে থাকে ফুলে ফুলে।
এছাড়া ভারতের সীমান্ত অঞ্চলেও রয়েছে অনেক ফুল ও ফলের বাগান।শিক্ষিত বেকার যুবকরা এ সুবিধা কাজে লাগিয়ে পাহাড়ের ঢালে সারিবদ্ধভাবে বক্স বসিয়ে মৌচাষের মাধ্যমে মধু আহরণ শুরু করে কর্মসংস্থানের পথ খুঁজে নেয়। অল্প সময় ও তুলনামূলক কম পরিশ্রমে বেশি লাভবান হওয়ায় দিন দিন মধু চাষে আগ্রহীর সংখ্যা বাড়ছে।
সিরাজগঞ্জ থেকে আসা শহিদুল, জিয়াউর ও সাইদুলসহ কয়েকজন মৌচাষী জানান,দুই সপ্তাহ আগে তাঁরা মৌবক্স নিয়ে এখানে এসেছেন। পাহাড়ে মধু সংগ্রহ শেষে সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করবেন তারা। সরিষা ফুল শেষ না হওয়া পর্যন্ত শেরপুর জেলায় থাকবেন তারা।এখান থেকেই তারা ২০ মণ মধু সংগ্রহ করবেন বলে তাদের আশা।
কয়দিন পর পর মধু নিষ্কাশন করা হয়? তিনারা বলেন প্রতি সপ্তাহে একবার করে বক্স থেকে মধু সংগ্রহ করেন।প্রতিবার একটি বক্স থেকে প্রায় ৪/৫ কেজি মধু পাওয়া যায়।প্রতি কেজি মধু এখান থেকেই ৬০০/৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়। অনেক সময় এর চেয়ে আরো বেশি দামে বিক্রি করা হয়। তবে সরিষা ফুলের মধুর দাম কিছুটা কম হয় বলে দাবি তাঁদের৷
বনবিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ মকরুল ইসলাম আকন্দ বলেন,গারো পাহাড়ের বনাঞ্চলে বিভিন্ন প্রকারের ফুল জন্ম আর সেখান থেকেই মৌমাছি মধু সংগ্রহ করে।তাই পাহাড়ে মধু চাষের উপযুক্ত স্থান। এখানে কেউ মৌচাষ করে মধু উৎপাদন করতে চাইলে বন বিভাগের অনুমতি সাপেক্ষে তা করতে পারে। এর মাধ্যমে আরও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন তিনি।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. সুকল্প দাস জানান,কৃষিবিভাগের মাঠ কর্মীরা মৌ চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। গারো পাহাড়ের মৌ চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য কৃষি বিভাগ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
Shohidul Islam
SOMAJER ALO24