আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার প্রধান বলেন, বিরোধী দল, সংসদে না থাকলেও তারা বক্তব্য দেয়- আমাদের নাকি পালানোর কোনো পথ থাকবে না। আমি এমন বক্তব্যদাতাদের উদ্দেশে বলতে চাই- শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না। মঙ্গলবার (১ আগস্ট) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সরকারপ্রধান এ কথা বলেন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে স্বেচ্ছায় রক্তদান শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ কৃষক লীগ। বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, তাদের মুখে বড় বড় কথা, আমরা নাকি পালানোর পথ পাবো না। তারা আমাদের নেতাকর্মীদের নামে অসংখ্য মামলা করেছে, অনেক নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। গ্রেনেড হামলা করেছে। আমরা তো প্রতিশোধ নেইনি। এক ভাগ প্রতিশোধ নিলেও তাদের হদিস পাওয়া যেত না। আমরা প্রতিশোধ নেইনি কারণ আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারেক রহমান ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার আসামি, মানি লন্ডারিং, দুর্নীতি, তার বিরুদ্ধে এফবিআইয়ের প্রতিনিধি এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে, সেই মামলায় তার সাজা হয়েছে। খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি। অথচ তাদের (বিএনপি) গঠনতন্ত্রেই আছে সাজাপ্রাপ্ত আসামি দলের নেতা হতে পারবেন না।
সরকারপ্রধান বলেন, যারা স্বাধীনতাবিরোধী, হানাদার বাহিনীর দোসর ছিল, যুদ্ধাপরাধী ছিল, বঙ্গবন্ধু যাদের বিচার শুরু করেছিলেন, তাদের মুক্তি দিয়ে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করা হয়, বিভিন্ন পদ দেন জিয়াউর রহমান। তারপর খালেদা জিয়াও একই কাজ করেন। খালেদা জিয়া বলেছিল- প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা বিরোধী দলের নেতাও না কি কোনোদিন হতে পারবে না। আজকে কি হলো। দেশে ফেরার পর জনগণ আমাকে ক্ষমতায় এনেছে।
বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ১৯৮১ সালের দেশে আসার পর জিয়াউর রহমান আমাকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি। আমি যে আমার মা-বাবা, ভাই বোনের জন্য দোয়া করবো, মোনাজাত করবো সে সুযোগটাও দেয়নি। রাস্তার ওপর বসেই আমাকে আমার মা-বাবার জন্য দোয়া পড়তে হয়েছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৫ আগস্টের সময় আমি এবং আমার ছোটবোন বিদেশে ছিলাম। জিয়াউর রহমান আমাদের আসতে বাধা দিয়েছে। শেখ রেহানার পাসপোর্টটাও রিনিউ করে দেয়নি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৮১ সালে আমার অবর্তমানে আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করে। আমরা অনেক বাধা অতিক্রম করে দেশে ফিরে আসি।
বঙ্গবন্ধু বাংলার জনগণকে গভীরভাবে ভালোবেসেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর ৯০ ভাগ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে ছিল, পেটে খাবার নেই, শিক্ষা বঞ্চিত। জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। জাতির পিতা বলতেন- আমাদের অর্থনীতি কৃষিনির্ভর, তিনি কৃষির বিপ্লব ঘটিয়েছেন। যুদ্ধকালে কোনো ফসল উৎপাদন হয়নি, আর যা ছিল তাও হানাদার বাহিনী পুড়িয়ে দিয়েছিল। রিজার্ভ মানি ছিল না। বঙ্গবন্ধু দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।
১৫ আগস্টের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাঙালির প্রতি বঙ্গবন্ধুর গভীর বিশ্বাস ছিল। তিনি বলতেন- ওরা আমার ছেলের মতো।.. কারবালার ময়দানে শিশু-নারীকে হত্যা করা হয়নি, কিন্তু ১৫ আগস্ট নারী-শিশুরাও রেহাই পায়নি। কামাল-জামালকে হত্যা করা হলো। ছোট রাসেল, তার কি দোষ ছিল? সেই সঙ্গে আমার চাচা, আমার সেজো ফুফুসহ সবাইকে হত্যা করা হয়েছিল।
Shohidul Islam
SOMAJER ALO24